৪০ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবে চকলেট!


বিশ্বব্যাপী বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশে। নানা উদ্বেগজনক ভবিষ্যদ্বাণী করে চলেছেন পরিবেশবাদীরা। এর মধ্যেই আমেরিকার ন্যাশনাল ওশেনিক এন্ড অ্যাটোমসফেরিক এডমিনিস্ট্রেশন এর গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন তথ্য; যা চকলেটপ্রেমীদের জন্য উদ্বেগেরই বটে।

গবেষকরা বলছেন, আগামী ৪০ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে চকলেট। এই ব্যবসার সাথে জড়িতরা আগামী ৩০ বছরের মধ্যেই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে পারেন।

চকলেটের মূল উপাদান আসে কোকো গাছ থেকে। এই গাছ ভাল জন্মে বিষুবরেখার কাছাকাছি অঞ্চলে। শুধু তাই নয়, এই গাছের চাষের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত তাপমাত্রা। .২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এই গাছের চাষের জন্য আদর্শ। এছাড়া আদ্রতা বেশি না হলে বা প্রচুর বৃষ্টিপাত না হলে এই গাছ ভাল জন্মে না।

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরু, মেক্সিকো, ইকুয়েডর, ব্রাজিল এবং আফ্রিকার কিছু দেশে উৎপাদিত হয় কোকো। তাপমাত্রা আর মাত্র দুই দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে প্রায় অসম্ভব হবে কোকোর চাষ। আর এ কারণেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে চকোলেট শিল্প।

এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের বাধ্য হয়ে পাহাড়ের উপর কোকো ক্ষেত তৈরী করতে হবে, যেখানে তাপমাত্রা তুলনামূলক কম। তখন বেড়ে যাবে খরচ । ব্যবসায়িক দিক বিবেচনায় কোকো চাষ থেকে সরে আসতে পারেন চাষীরা। আবার দক্ষিণ আমেরিকায় হাজার ফুট উচ্চতার পাহাড়গুলোর বেশিরভাগ বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করায় সেগুলোতেও কোকো চাষ সম্ভব হবে না। ফলে চকলেট শিল্প যে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে তা টের পাওয়া যাচ্ছে।

গত বছর থেকেই মন্দা দেখা যাচ্ছে চকোলেটের বাজারে। চাহিদার বিপরীতে যোগান কম। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বরং বেড়েছে মিষ্টি বিক্রি। চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ব্রাজিল এবং সাবেক সোভিয়েতে নব্বই এর দশক থেকেই অসংখ্য শ্রমিক কোকো চাষের সাথে জড়িত আছেন। তবু চাহিদা অনুসারে যোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হার্ডম্যান এগ্রিবিজনেসের গবেষক হকিন্স বলেছেন, ‘কোকো উৎপাদন অপ্রতুল, কারণ চাষের পদ্ধতি যুগোপযোগী নয়।’ তিনি জানান দিন দিন এই ঘাটতি বাড়তেই থাকবে।
Share on Google Plus

About Admin

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.