নিষিদ্ধ হলেন প্রসূন আজাদ



অভিনেত্রী প্রসূন আজাদকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পী রোকেয়া প্রাচীর অভিযোগের ভিত্তিতে টেলিভিশন নাট্যনির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অভিনয়শিল্পী সংঘের এ ব্যাপারে সম্মতি রয়েছে।
ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরিচালক রোকেয়া প্রাচীর অভিযোগের ভিত্তিতে ডিরেক্টরস গিল্ড প্রসূনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তিন দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। তিন দিনের মেয়াদ ২৮শে অক্টোবর শেষ হলেও এর মধ্যে কোনো যোগাযোগ করেননি প্রসূন। তার ফেসবুক থেকে খুব আপত্তিকর স্ট্যাটাস আসে, যা এই ইন্ডাস্ট্রির সবার জন্য খুবই লজ্জার। ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, রোকেয়া প্রাচী ও প্রসূনের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করতে চেয়েছি।

এ ব্যাপারে প্রসূনের কাছে যখন চিঠি দেয়া হয়, তখনো তিনি উত্তর না দিয়ে চুপ থাকেন। এটা সংগঠনকে অবমাননা, অশ্রদ্ধা ও গুরুত্বহীন ভাবা। এ কারণে আগামী এক বছর ডিরেক্টরস গিল্ডের কোনো সদস্য তাকে নিয়ে প্রোডাকশন তৈরি করতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অভিনয়শিল্পী সংঘের এ ব্যাপারে সম্মতি রয়েছে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞার কথা শুনেও বেফাঁস মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেননি প্রসূন। তিনি বিষয়টি নিয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এ ব্যাপারে প্রসূন বলেন, ডিরেক্টরস গিল্ডের কেউ আমার মতে ভালো নির্মাতা নন। সেখানে অনেকে অভিনয়শিল্পী হিসেবে ভালো আছেন। যারা নির্মাণও করেন। তবে আমি মনে করি নির্মাতা হিসেবে কেউ ভালো নন। তাই ওই সংগঠনটি আমাকে নিয়ে এক বছর কাজ করবে কি করবে না এ নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আর ডিরেক্টরস গিল্ডকে আমি কোনো গুরুত্ব দিচ্ছি না।

আরেকটা কথা হলো, আমি এই সংগঠনের কোনো বেতনভুক্ত কর্মী নই। আমাকে তারা নিষিদ্ধ করলে কিছু আসবে যাবে না। প্রসূনকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রোকেয়া প্রাচীর কাছে জানতে চাইলে তিনি মানবজমিনকে বলেন, এ নিয়ে আমার এখন আর তেমন কিছু বলার নেই। প্রসূনের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিয়ে আমি ডিরেক্টরস গিল্ড, টেলিভিশন প্রোগ্রাম অ্যাসোশিয়েশনস অব বাংলাদেশ ও অভিনয়শিল্পী সংঘ- তিন সংগঠনকেই লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তারা যা ভালো বুঝেছেন সেই সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।

এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, প্রসূন যে অন্যায় আচরণ করেছে তা শুধু আমাকে নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রির সব নির্মাতা কলাকুশলীকে অপমান করেছে। আমরা যারা মিডিয়ায় কাজ করি তাদের সবার শিল্পীসুলভ আচরণ করা উচিত। ইন্ডাস্ট্রির প্রতি শ্রদ্ধা রাখা উচিত। এই শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে মিডিয়ায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আমি মনে করি। উল্লেখ্য, ‘স্বপ্ন সত্যি হতে পারে’ নাটকের শুটিংকে কেন্দ্র করে নির্মাতা ও প্রযোজক রোকেয়া প্রাচীর সঙ্গে অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের কথাকাটাকাটি হয়।

পরে দুজনই পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তবে প্রসূন আজাদ যে ধরনের স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন তাতে একজন নির্মাতা কিংবা সিনিয়র শিল্পীর প্রতি অসম্মানজনক ও অপমানজনক আচরণই ছিল। আর এ নিয়ে মিডিয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। একপর্যায়ে এর জের ধরে প্রসূন আজাদের বিরুদ্ধে ১৯শে অক্টোবর রোকেয়া প্রাচী অভিযোগ করেন নাটক সংশ্লিষ্ট তিন সংগঠনের কাছে। সে মোতাবেক তিন সংগঠনের সম্মতিতে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার খ্যাত এ অভিনেত্রীকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.