তিন সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট



শিশু আইনের অসঙ্গতি দূরীকরণের বিষয়ে যথাসময়ে আদালতে ব্যাখ্যা দাখিল না করায় সরকারের তিন সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে আদালতের আদেশ অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তিন সচিবকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। সরকারের তিন সচিব হলেন আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হক, একই মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও জাস্টিস উইংয়ের সচিব মো. শহিদুল হক ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব। তিন সচিবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যটর্নি জেনারেল শেখ মো. মনিরুজ্জামান কবির। বিষয়টি নিশ্চিত করে এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের আদেশ অমান্য করায় এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে হাইকোর্ট তিন সচিবের বিরুদ্ধে ওই রুল জারি করেন।

এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ আগস্ট শিশু আইনের অসঙ্গতির বিষয়ে তিন সচিবকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ওই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় কিন্তু গত আড়াই মাসেও তাঁরা এই ব্যাখ্যা দাখিল করেননি। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। এ সময় তিন সচিবের পক্ষে আইনজীবী মো. মোজাম্মেল হক সময় চেয়ে আবেদন করেন। ওই আবেদনটি দেখে আদালত বলেন, আড়াই মাসেও কেন তাঁরা জবাব দাখিল করতে পারলেন না। শিশু আইনের অসঙ্গতির কারণে বিচারিক আদালতে মামলার নিষ্পত্তিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

একপর্যায়ের আদালত তিন সচিবকে তলব করতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির বলেন, কেন তাঁরা আদালতের আদেশ অমান্য করলেন এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া যেতে পারে। এর পরই হাইকোর্ট তিন সচিবের বিরুদ্ধে ওই রুল জারি করেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালে শিশু আইনে সর্বশেষ সংশোধনী আনা হয়। এই আইনের অধীনে প্রতিটি জেলায় গঠন করা হয় শিশু আদালত। শিশুকে ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রংপুরে দায়েরকৃত চারটি মামলার আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানি করে শিশু আদালত। কিন্তু শিশু আদালত তাদের জামিন দেননি। পরে আসামিরা হাইকোর্টে এসে জামিন চান।

ওই জামিনের শুনানিকালে শিশু আইনের অস্পষ্টতা নিরসনে আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম। এর আগে শুনানিতে তিনি বলেছিলেন, শিশু আইনে বলা হয়েছে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধের শিকার বা ভিকটিম এবং সাক্ষী শিশু হলে ওই মামলার বিচার শিশু আদালতে হবে কিন্তু শিশুকে ধর্ষণ বা হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার বিচার কোন আইনে বা আদালতে হবে সেটি এই শিশু আইনে স্পষ্ট করা হয়নি। আইনে এটি স্পষ্ট করা উচিত ছিল।

Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.