রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মুখে আত্মসমর্পণকারী দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের ছয়দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
এরা হলেন রূপনগরে অভিযানে নিহত জঙ্গিনেতা সাবেক মেজর জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলা (৩৪) এবং পলাতক জঙ্গিনেতা মাইনুল ইসলাম মুসার স্ত্রী তৃষা মনি ওরফে উম্মে আয়শা (২২)। ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত সিকদার পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার হেফাজতে নেওয়ার এই আদেশ দেন।
এ আদালতের সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তা এসআই লিয়াকত আলী বলেন, এদিন আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আসামিদের কিছু বলার আছে কি না তা জানতে চান বিচারক। “আসামিদের মধ্যে জেবুন্নাহার বিচারককে জানান, ‘মেয়েকে নিয়ে কষ্ট হচ্ছে’।
এ সময় তার চোখে মুখে কোনো মনস্তাপ বা অনুশোচনা দেখা যায়নি।” এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক সায়েদুর রহমান অভিযানের পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় দুই নারীকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ফের ১০ দিন করে রিমান্ড চান।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিদের একবার রিমান্ডে নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ও তাদের সহযোগী পলাতক জঙ্গি সদস্যদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহ, জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অর্থের যোগানদাতাদের তথ্য সংগ্রহ এবং গ্রেপ্তার ও ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। আসামিরা নারী হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় নারী পুলিশকে উপস্থিত থাকারও নির্দেশ দেন বিচারক। রিমান্ড শুনানিকালে জেবুন্নাহারের কোলে দেড় বছরের শিশু এবং তৃষ্ণার কোলে চার মাসের শিশু ছিল। এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর এ দুই আসামির সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল আদালত।।
গত ২৩ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে দক্ষিণখানের পূর্ব আশকোনায় ৫০ নম্বর সূর্য ভিলায় জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। সেখানে ১৬ ঘণ্টার ‘অপারেশন রিপল ২৪’ নামের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়।
তিন তলা ওই বাড়িতে অভিযানের এক পর্যায়ে দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন এই দুই নারী। তারা একটি পিস্তল ও গুলিও পুলিশের জমা দেন। এ ঘটনায় ২৫ ডিসেম্বর রাতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পুলিশ বাদী হয়ে দক্ষিণখান থানায় মামলা দায়ের করে। অভিযানের সময় আত্মসমর্পণকারী চারজনসহ আটজনকে আসামি করা হয়।
0 comments:
Post a Comment
Thanks for your comments.