ভুল ট্রেনে চরে ভারতের ছত্তিশগড়ের ১৫ বছরের এক কিশোরী গত অক্টোবরে আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে চেপে বসেছিল। কিন্তু সে চড়ে বসে ভুল ট্রেনে। যখন ট্রেন থামল তখন সে দিল্লিতে। অচেনা এ শহরে নেমে সে কী করবে, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিল না।
সাহায্য চাইল রেলস্টেশনে এক পানি বিক্রেতার কাছে। এই সহায়তা চাওয়াই কিশোরীর জীবনে কাল হয়ে এল। জীবনে ঘটে যায় অপহরণ, ধর্ষণ, বিক্রি হয়ে যাওয়ার মতো নানা ঘটনা। তবে শেষ পর্যন্ত সে উদ্ধার হয়েছে।
আজ শনিবার পুলিশের বরাত দিয়ে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পানি বিক্রেতা আরমান কিশোরীটিকে সাহায্য করার নামে নিয়ে যায় ‘সারাই কালে খা’ এলাকায়।
সেখানে আরমান তাঁর স্ত্রী হাসিনার সহায়তায় কিশোরীটিকে ধর্ষণ করে। এরপর তারা তাকে পাপ্পু যাদব নামের এক ব্যক্তির কাছে বিয়ের নামে ৭০ হাজার রুপিতে বিক্রি করে দেয়। কিশোরীটিকে ফরিদাবাদে নিয়ে আসে পাপ্পু যাদব। সেখানে প্রায় দুই মাস ছিল তারা। এ সময় পাপ্পু ওই কিশোরীকে শারীরিক ও মানসিক নানাভাবে নির্যাতন করত। একদিন কিশোরীটি ওই বাড়ি থেকে পালাতে সক্ষম হয়।
এসে পৌঁছায় হজরত নাজিমুদ্দিন রেলওয়ে স্টেশনে। কিন্তু বিধিবাম। এখানে এসে আবার হাসিনার সঙ্গে তার দেখা। হাসিনা তাকে নেশাজাতীয় এক ধরনের পানীয় খাওয়ায়।
এরপর আধা-অচেতন অবস্থায় কিশোরীটিকে হাসিনা তুলে দেয় ২২ বছরের মো. আফরোজ নামের এক তরুণের হাতে। আবারও একই ঘটনা। আফরোজ কিশোরীটিকে রেলস্টেশনের কাছেই ধর্ষণ করে ও হাসিনার হাতে কিছু টাকা তুলে দেয়।
এবার কিশোরীটি কোনোভাবে সেখান থেকে পালিয়ে এক পথচারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ওই পথচারী পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান। দিল্লি পুলিশ গত বৃহস্পতিবার হুমায়ূন টোম্ব এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করেছে। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তাকে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, সারাই কালে খা-তে বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে আফরোজ ও পাপ্পুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতেও চেষ্টা চলছে।
0 comments:
Post a Comment
Thanks for your comments.