মাশরাফিকে নিয়ে যা বললেন আকরাম খান



মাশরাফিকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি ও সফল অধিনায়ক হিসেবে আখ্যা দিলেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আকরাম খান। অবসর বা অধিনায়কের দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত মাশরাফিকেই নেয়ার সুযোগ দেয়া এবং সেই সিদ্ধান্ত সবার মেনে নেয়া উচিতও বলে মনে করেন তিনি।
বয়স আগে না পারফরম্যান্স? মাশরাফি বিন মুর্তজার মনে এখন এই প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। সাতবার অস্ত্রোপচারের টেবিল থেকে নেমেও খেলে যাচ্ছে। পারফরম্যান্স একেবারে খারাপ নয়। নেতৃত্বে অদ্বিতীয়। দলকে বিনি সুতোর মালায় গেঁথে রাখার নিপুণ কারিগর। তবু ইদানীং কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, মাশরাফি কেন এখনো খেলে যাচ্ছেন? অথবা মাশরাফিকে কি আরো খেলানো হবে? আবার পাল্টা প্রশ্ন করার লোকও আছেন। 


কেন খেলবেন না মাশরাফি? কেন তিনি থাকবেন না ওয়ানডে দলের অধিনায়ক? বয়স ৩৩ পার হয়ে গেছে বলেই কি! কৌতূহলীদের প্রশ্ন মূলত ২০১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে। মাশরাফি কি ওই বিশ্বকাপেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন? তত দিন খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন তো! নাকি বিকল্প কিছু ভাবছে বিসিবি? কয়েক দিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মাশরাফির টি-২০ থেকে অবসর নেয়ার প্রসঙ্গ একটি প্রক্রিয়া শুরুর কথা বলেছেন। তবে প্রভাবশালী এক বোর্ড পরিচালক বলেছেন, ‘যদি ফর্ম ঠিক থাকে এবং মাশরাফি চোটমুক্ত থাকে, তার খেলা চালিয়ে যাওয়ায় সমস্যা দেখে না বোর্ড।’ 

১৫ বছর ধরে বল হাতে দারুণ সফল নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত মাশরাফি। নেতৃত্বেও সফল। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। অথচ এখনই তার বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। পুরনো যাবে নতুন আসবেÑ এটিই স্বাভাবিক। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাশরাফিকেই সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। মাশরাফির বন্দনায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বলেন, ‘মাশরাফি একজন সফল অধিনায়ক। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি। মাশরাফির ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত তাকেই নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। ক্যারিয়ার নিয়ে মাশরাফির সিদ্ধান্তই সবার মেনে নেয়া উচিত।’ অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির এটি তৃতীয় ‘ইনিংস’। প্রথম দু’বারই তার অধিনায়কত্ব-অধ্যায় শেষ হয়েছে চোটে পড়ে। 

২০১৪ সালের নভেম্বরে তৃতীয় দফায় অধিনায়কত্ব পাওয়ার পরও বড় শঙ্কা ছিল এটি নিয়েই। কিন্তু একসময় চোটকে নিত্যসঙ্গী বানিয়ে ফেলা মাশরাফি সেই অভিশাপকে জয় করে গত বছর তিনেক টানা খেলে যাচ্ছেন। ম্যাচের পর ম্যাচ হারতে থাকা বাংলাদেশকে ঘোর অমানিশা থেকে উজ্জ্বল আলোয় নিয়ে আসার কৃতিত্বও তার। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপে ৫-০ ম্যাচে সিরিজ জয় দিয়ে শুরু। এরপর ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা। সেটিই যেন জাদুমন্ত্রের মতো বদলে দিলো মাশরাফির বাংলাদেশকে। পাকিস্তান, ভারত, দণি আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের বিপে টানা পাঁচটি সিরিজ জয়। 

পরে ইংল্যান্ডের বিপে ২-১ ব্যবধানে হারলেও একটু এদিক-ওদিক হলেই বাংলাদেশ জিততে পারত সেটিও। মাশরাফির অধিনায়কত্বের তৃতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে জয় পায়নি শুধু নিউজিল্যান্ড সিরিজে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ ১-১-এ ড্র হয়েছে। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও নিউজিল্যান্ডের বিপে জয় এসেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও নিউজিল্যান্ডের বিপইে স্মরণীয় এক জয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো খেলল সেমিফাইনাল। এ সময়ে মাশরাফির নেতৃত্বে ৪০টি ওয়ানডের ২৪টিতে জয়, সাফল্যের হার ৬২.৫ শতাংশ। একাই ম্যাচ জিতিয়ে দেয়ার মতার দিক থেকে দলের অন্য বোলারদের চেয়ে একটু পিছিয়ে থাকতে পারেন। 

তবে পরিসংখ্যান কিন্তু মাশরাফিকেই রাখছে ১ নম্বরে। আবার অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর বাংলাদেশের পে সর্বোচ্চ ৫৮ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন মাত্র ৪.৯৪। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি উপলে ৫০ দিনের সফরে মাশরাফি একবারের জন্যও ফিজিওর টেবিলে ওঠেননি। খেলা চালিয়ে যাওয়ার মতো ফর্ম ও ফিটনেস যেহেতু এখনো আছে, তখন কেন এ বিষয়ে কথা বলা
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.