আমি নির্দোষ : খালেদা জিয়া


জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে দাঁড়িয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করার পাশাপাশি রাজনৈতিক বক্তব্যও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।


তিনি বলেছেন, “সারা দেশ আজ কারাগারে পরিণত হয়েছে। একের পর এক মিথ্যা মামলায় বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতারা আজ ঘরছাড়া। আমার বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের তিন কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ আদালতের বিচারক বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৩২ জন সাক্ষীর বক্তব‌্য পড়ে শুনিয়ে প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান, এসব অভিযোগ সঠিক কি না।

জিয়া দাতব‌্য ট্রাস্টের নামে আসা তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চার জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য সঙ্গে নিয়ে এলেও তা পড়েননি খালেদা জিয়া। বিচারকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগগুলো সত্য নয়।

খালেদা বলতে থাকেন, এদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবতা সামাজিক ন্যায়বিচার প্র্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষ জীবন দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে, অথচ সেসব লক্ষ্য আজও পদদলিত; সারা জাতি আজ লঞ্ছিত, নির্যাতিত। এ সরকার আজ সারা দেশকে বিশাল কারাগারে পরিণত করেছে। সব জায়গায় আজ গভীর অস্থিতরতা, অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা। বেলা পৌনে ১টায় শুনানি শুরু হয়ে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম চলে।

খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের আগে তার আইনজীবীরা সাক্ষীদের শপথ করানোর প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললে প্রায় ঘণ্টাখানেক যুক্তিতর্ক চলে। পরে বিচারক সাক্ষ‌্য পড়ে শোনান এবং খালেদা প্রায় ১৫ মিনিট আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। এক পর্যায়ে তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আজকে আর বেশি বক্তব্য দেব না, সামনের তারিখে দেব।

জবাবে বিচারক বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে যত খুশি বক্তব্য আপনি দিতে পারেন। বক্তব্য দেওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে। পরে খালেদার বাকি বক্তব‌্য উপস্থাপনের জন‌্য ৮ ডিসেম্বর তারিখ রাখেন বিচারক।

খালেদা জানিয়েছেন, তিনি সাফাই সাক্ষী হাজির করতে চান, তবে সাক্ষীদের কোনো তালিকা তিনি দেননি। নিয়ম অনুযায়ী আসামিপক্ষ সাক্ষীদের তালিকা দিলে সে অনুযায়ী তাদের ডাকা হবে। তারা এলে হবে সাক্ষ‌্যগ্রহণ, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জেরা করবে। দুই পক্ষের সাক্ষ‌্য ও জেরা শেষ হলে হবে চূড়ান্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন। এরপর বিচারক রায়ের তারিখ ঠিক করে দেবেন।

এ মামলায় দুই আসামি বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আগেই আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। মামলার অপর আসামি খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী পলাতক।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.