উত্তরায় নিজের দুইটি ফ্ল্যাটে অভিনব কায়দায় গড়ে তুলেছিলেন মো. ফুয়াদ বিন সুলতান (৩৩)। শুধু পর্নগ্রাফি নয়, দেহ ও মাদকের ব্যবসা করে যাচ্ছিলেন নিজেকে পর্ন জগতের শিল্পী দাবি করা এই ব্যক্তি।
ফুয়াদকে গ্রেফতারের পর বুধবার বিকালে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক সারোয়ার বিন কাশেম। তিনি জানান, ইংরেজিতে অনার্স শেষ করে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে দীর্ঘদিন চাকরি করার পর ফুয়াদ ২০১১ সাল থেকে গুলশান ও উত্তরা এলাকায় বাসা ভাড়া করে দেওয়ার ব্যবসা শুরু করেন। র্যাব কর্মকর্তা জানান, ২০১৪ সাল থেকে ইন্টারনেটের ব্যবসা শুরু করেন ফুয়াদ। তখন থেকেই পর্নসাইটের ব্যবসাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার চিন্তা করেন।
সেই চিন্তা থেকে ২০১৫-১৬ সালে দুটি ওয়েবসাইট চালু করে পর্নগ্রাফির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তবে ফুয়াদের ওয়েবসাইটগুলোর পর্নগ্রাফির ধরণটা ছিল অন্য ওয়েবসাইটগুলো থেকে ভিন্ন। বিভিন্নভাবে মেয়েদের আপত্তিকর ছবি ও ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতেন ফুয়াদ। তবে সেসব সাইটে সকলের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের সাইটে লগইনের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড সরবরাহ করা হতো বলে জানান তিনি।
সারোয়ার বিন কাশেম জানান, পরে সাইটে কাউকে পছন্দ করলে, নির্ধারিত মূল্যে তাকে উত্তরার নিজ বাসাতে শারীরিক সম্পর্কের ব্যবস্থা করে দিতেন ফুয়াদ। ফ্ল্যাটে আসা তরুণ-তরুণীদের ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকও সরবরাহ করতেন তিনি। তিনি জানান, গ্রাহকরা যখন ওই ফ্ল্যাটে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন, তখন সেসব দৃশ্য গোপনে ভিডিও করতেন ফুয়াদ।
এরপর সেসব ভিডিও দেখিয়ে তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করে পুনরায় শারীরিক সম্পর্কের জন্য বাধ্য করতেন তিনি। তিনি মুখোশ পরে মেয়েদেরকে অশালীন অবস্থায় পাশে বসিয়ে ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করতেন বলে জানান র্যাব অধিনায়ক। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি আটটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে এ ধরনের পর্ন ব্যবসা দেশের মধ্যে একমাত্র ফুয়াদই করতেন।
ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করা এবং ফুয়াদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উত্তরা মডেল টাউনের বাসা থেকে ফুয়াদকে আটক করে র্যাব-১। এ সময় তার কাছ থেকে পাইরেটেড সিডি, পর্নগ্রাফিতে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ বেশকিছু ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।