বিয়ানীবাজারের সিলেটের একটি গ্রামে রাতে ঘরে ঢুকে কিশোরী দুই বোনকে বেঁধে ধর্ষণের দায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মো. ফখরুল ইসলাম জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে যাবজ্জীবন দণ্ড ছাড়াও পাঁচজনকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৫ মে রাত তিনটার দিকে বেড়া কেটে আসামিরা ঘরে ঢুকে দুই বোনকে বেঁধে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর পালিয়ে যাওয়ার সময় জয়নুলকে চিনে ফেলেন দুই বোনের বাবা। পরের দিন জয়নুলের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ছয়জনকে আসামি করে তিনি বিয়ানীবাজার থানায় মামলা করেন।
আজ রোববার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১নং আদালত) এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বিয়ানীবাজারের জয়নুল আহমদ (৪০), কালাম আহমদ (২৬), আবদুল বাছিত (৩৬), হাসনু মিয়া (৩৭) এবং সেলিম উদ্দিন (২৫)। আসামিদের মধ্যে বাছিত পলাতক রয়েছেন। মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি জয়নুলের ছোট ভাই ফখরুল ইসলামের (৩৬) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
পুলিশ জয়নুল এবং তাঁর ছোট ভাই ফখরুলকে গ্রেপ্তার করার পর তাঁদের সহযোগীদের চিহ্নিত করে। এরপর পর্যায়ক্রমে অভিযান চালিয়ে কালাম, হাসনু ও সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে আসামিদের মধ্যে চারজনই ধর্ষণের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে বিয়ানীবাজার থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর আদালতে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট অভিযোগ গঠন করা হয়।
১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আজ ওই রায় দিলেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী ইকবাল হক চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরিব ঘরের স্কুলপড়ুয়া দুই মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হওয়ায় অনেকের দুর্ভাবনা ছিল ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে। রায়ে সেই সংশয় দূর হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায় সমাজে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সহায়তা করবে।’
0 comments:
Post a Comment
Thanks for your comments.