টানা বৃষ্টি ও বিরূপ আবহাওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল


রাজধানীর ধানমন্ডির বাসিন্দা আফসার আলী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবাস ফেরত এক আত্মীয়ের ছেলের বিয়েতে সপরিবারে যাওয়ার জন্য গত কয়েকদিন যাবত প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে তার সন্তানরাও আনন্দে উচ্ছসিত ছিলেন।


কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার কারণে শনিবার সকালে প্রোগ্রাম বাতিল করতে বাধ্য হন। শুধু আফসার আলীই নয়, শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ও বিরূপ আবহাওয়ায় রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টিপাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

এর ফলে বিভিন্ন শ্রেণি পেশা বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষরা পড়েছে চরম বিপাকে। সকালে মিরপুর থেকে মতিঝিলে অফিসগামী বাস না পেয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেন ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, টানা বৃষ্টিতে বাসা থেকে বের হতে পারি না। বাসার সামনেই পানি জমে গেছে। নগরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এত খারাপ বলে শেষ করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, দেখুন, কত সময় ধরে ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। বাসও পাচ্ছি না। প্রায়ই ভিজে গেছি, অফিস তো করতে হবে। শনিবার সরকারি অফিস বন্ধ থাকলেও বেসরকারি অফিস ও স্কুল কলেজ খোলা।

বৃষ্টিতে আধা ভেজা হয়েই অভিভাবকরা ছোট বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে অল্প দূরেও অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া নিয়ে বেশ বিরক্ত তারা। বাসে ওঠতে পারলেও ভিজে যাওয়া সিট রেখে দাঁড়িয়েই গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। ছোট শিশুকে নিয়ে বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাচ্ছিলেন মিরপুরের এক গৃহবধূ। তিনি বলেন, এমন বৃষ্টিতে আর ভালো লাগে না। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয়। বাসে ওঠতে পারলেও ভেজা সিটে বসা যায় না। তাই ছোট শিশুকে নিয়ে দাঁড়িয়েই যেতে হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, সিএনজি (সিএনচি চালিত অটো রিকশা) তো পাওয়ায় যায় না। পেলেও আকাশ ছোঁয়া দাম চেয়ে বসেন।

আমাদের মতো ফ্যামেলির পক্ষে তা সম্ভব না। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় গোপালগঞ্জে। গত কয়েকদিনের মধ্যে গত ১৫ অক্টোবর ৬১ মিলিমিটার, ১৯ অক্টোবর ৩১ মিলিমিটার ও ২০ অক্টোবর ৫০ মিলিমিটার হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে রোববার সকাল থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
Share on Google Plus

About Admin

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.