ডিজাইন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লাইসেন্স’ পেয়েছে বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন (বিএইসি)। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণ পর্বের প্রাথমিক কাজ শুরুর (ফার্স্ট কংক্রিট পৌরিং বা এফসিপি) অংশ হিসেবে বাংলাদেশ এই লাইসেন্স পায়।
গতকাল শনিবার বিকেলে স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএইআরএ শর্তসাপেক্ষে এই লাইসেন্স দিয়েছে। এই লাইসেন্স পাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্ব পরমাণু ক্লাব’ (নিউক্লিয়ার নেশন)-এ যুক্ত হলো। বাংলাদেশ এই ক্লাবের ৩২তম দেশ। আগামী ৩০ নভেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মূল কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম ইউনিটের লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটি (বিএইআরএ)। বিএইআরএর চেয়ারম্যান নঈম চৌধুরী আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান দিলিপ কুমার সাহার কাছে লাইসেন্স তুলে দেন। এখন নিঃশর্ত লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রকল্পের মালিক আণবিক শক্তি কমিশনকে কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।
এর মধ্যে রয়েছে প্রকল্প এলাকার বেলেমাটি পরমাণু চুল্লি (রিঅ্যাক্টর) স্থাপনের উপযোগী করে তোলা, পদ্মাপাড়ের প্রতিরক্ষা বাঁধ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নিরাপদ করে তোলা, জরুরি অবস্থায় ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা এবং প্রকল্পের অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
আণবিক শক্তি কমিশন সূত্র জানায়, এই কাজগুলো সম্পন্ন করে আগামী মার্চ মাস নাগাদ তারা নিঃশর্ত লাইসেন্স পাবে বলে আশা করে। বিএইআরএর সূত্র জানায়, যেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি স্থাপিত হবে, সে জায়গা একটি পারমাণবিক চুল্লি ১০০ বছর চলার মতো মজবুত ও টেকসই হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হলেই চূড়ান্ত লাইসেন্স দেবে।
সূত্রগুলো জানায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রূপপুরের বেলে মাটি একটি বড় সমস্যা। এই মাটিকে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের উপযোগী করার জন্য ঠিকাদার কোম্পানি অ্যাটমট্রয়েক্সপোর্ট ‘ডিপ সয়েল মিশ্চিং’ নামের একটি জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। পদ্মাপাড়ের বাঁধও প্রকল্পের নিশ্চিত নিরাপত্তার উপযোগী করে তোলার জন্য কতিপয় প্রকৌশলগত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
এই কাজগুলো গত ৭ আগস্টের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু বর্ষা মৌসুমের কারণে সব কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। ফলে চূড়ান্ত লাইসেন্স পেতে ছয় মাসেরও বেশি দেরি হবে। তবে এ জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় পেছাবে না। গত বছরের ২১ জুন বিএইআরএ রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সাইট লাইসেন্স দিয়েছিল।
এই লাইসেন্স দেওয়ার আগে সেখানকার মাটি, পানি, বাঁধ প্রভৃতির অবস্থা যথাযথভাবে পর্যালোচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। রাশিয়ার ঠিকাদার কোম্পানির দেওয়া প্রতিবেদনে যেভাবে বলা হয়েছে, সেটাই যথার্থ বিবেচনা করে তখন সাইট লাইসেন্স দেওয়া হয়।
0 comments:
Post a Comment
Thanks for your comments.