ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি



বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দলের সাধারণ সভায় শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
এতে প্রক্টরের ঘুষিতে এক শিক্ষক আহত হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাংলোতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ক্যাফেরিয়ায় এ ঘটনা ঘঠে। এ নিয়ে শিক্ষদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আহত শিক্ষক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সিনেট সদস্য আ ক ম জামাল উদ্দীন। 


সভায় উপস্থিত একাধিক শিক্ষকসূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শাহ মো. মাসুম ও ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছারের আঘাতে আহত হন অধ্যাপক জামাল উদ্দীন। এ সময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালও তার দিকে চেয়ার নিয়ে তেড়ে আসেন বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক জামাল উদ্দীন। 

 প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বিকাল থেকেই শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা চলছিল। সভায় বক্তৃতায় কয়েকজন শিক্ষক সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক নিয়ে কটূক্তি করছিলেন। অধ্যাপক জামাল উদ্দীন তার নির্ধারিত বক্তৃতায় সাবেক উপাচার্যকে নিয়ে এভাবে কথা বলায় ঐ শিক্ষকদের সমালোচনা করেন। 

পরবর্তীতে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী তার বক্তৃতায় অধ্যাপক জামাল উদ্দীনকে সরাসরি কটাক্ষ করে বক্তৃতা দিতে থাকেন। এ সময় অধ্যাপক জামাল উদ্দীন দাড়িয়ে প্রক্টরকে দায়িত্বশীল পদে থেকে এরকম বক্তৃতা না দিতে বলেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী অধ্যাপক জামাল উদ্দীনের দিকে তেড়ে যান এবং কিলঘুষি মারতে থাকেন। এই সময় অধ্যাপক মাসুম ও অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্রও এগিয়ে এসে অধ্যাপক জামাল উদ্দীনকে মারধর করেন। পরবর্তীতে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন শিক্ষক অধ্যাপক জামাল উদ্দীনকে উদ্ধার করে নিয়ে উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের বাংলোতে যান। 

সেখানে চিকিৎসক ডেকে আহত শিক্ষকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন উপাচার্য। অধ্যাপক জামাল উদ্দীন বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও ঢাবির উপাচার্যের মর্যাদার কথা ভেবে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নতুন নিয়োগ দেননি অথচ এই উপাচার্যের সুবিধাভোগী শিক্ষকরাই তাকে কটাক্ষ করে কথা বলছিল। এতে শিক্ষকদের মান-সম্মানের হানি হচ্ছে ভেবে কথা বলেছিলাম বলে আমাকে এভাবে আঘাত করা হয়েছে। অধ্যাপক জামাল উদ্দীনকে আঘাতের অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রক্টর। তিনি বলেন, যারা এসব বলছে তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে। 

আমি নিজেই জামাল উদ্দীনের আঘাতে আহত হয়েছি। এ বিষয়ে অধ্যাপক আব্দুল আজিজ বলেন, আমার জীবনেও শিক্ষকদের সভায় এ ধরণের ঘটনা দেখিনি। যদি এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে নীল দলের শিক্ষকরা আর একসাথে বসব না। প্রয়োজনে মানববন্ধনেরও আয়োজন করব। উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.