কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভয়ে আছেন





বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচন আগামীকাল। দীর্ঘ ৮ বছর পর প্রাচ্যের ডান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জে চলছে ভোটের লড়াই।


 এই নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়েই জানা যাবে আগামী ৫ বছরের জন্য কে হচ্ছেন এই অঞ্চলের অভিভাবক।

 নির্বাচন, ভোট আর প্রার্থীদের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় মশগুল নারায়ণগঞ্জবাসী। প্রার্থীদের দেয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে চলছে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ। আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত, দলীয় ইমেজ।

 সাধারণ ভোটার থেকে শুরু করে দলীয় কর্মী-সর্মথকদের মাঝে বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা, উৎসাহ, উদ্দীপনা। পাশাপাশি ভোটারদের মাঝে আছে ভয়, শঙ্কা-উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও।

 বিশেষ করে নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হতে পারে বলে অনেক আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন স্থানীয়রা।

 নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি শুরু থেকেই দেয়া হচ্ছে। তবু স্থানীয় ভোটার, দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

 একাধিক স্থানীয় ভোটার, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এবারের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে তেমন কোনো শঙ্কা না থাকলেও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে ভয়-শঙ্কা আছে।

 নগরীর টানবাজার এলাকার সরকারদলীয় এক ওয়ার্ড নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ নির্বাচনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরকারি দলেরই একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।

 সেক্ষেত্রে সরকারদলীয় প্রার্থীদের মাঝেই ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা হতে পারে। ১৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে শঙ্কার কথা সাবার মাঝেই তো আলোচনা হচ্ছে, এটা নিয়ে ভোটারদের মাঝে তাই শঙ্কা-উদ্বেগ, উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।

 পাশাপশি যে যাই বলুক সাধারণ ভোটার এ নিয়ে ভয় পাচ্ছেন। নাসিক নির্বাচনে ১৩৭টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে ওই কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নজর রাখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

 ইসি কর্মকর্তারা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখে সেখানে বাড়তি ফোর্স মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 যে ২২ প্লাটুন বিজিবি সদস্য নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ব পালন করবেন তার ১০ প্লাটুনই থাকবে সিদ্ধিরগঞ্জে।

তারা দুটি স্থানে অবস্থান নিয়ে টহল দেবেন। এছাড়া শহর এলাকায় সাত প্লাটুন ও বন্দর এলাকায় পাঁচ প্লাটুন বিজিবি থাকবে।

 রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে পুরো শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছেন তারা।

 আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেলের রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, এবার নারায়ণগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ হাজার ৬০০ সদস্য মাঠে থাকবেন।

 ১৩৭টি কেন্দ্রের তালিকা পেয়েছি একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে। এগুলোকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হবে। অন্যদিকে মঙ্গলবার থেকে র্যাবের ২৭টি মোবাইল টিম মাঠে নেমেছে। প্রতিটি দলে আছেন ১২ জন করে সদস্য।

এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশের তিনটি করে মোট ৮১টি টিমও টহলে থাকবে। প্রতিটি টিমের সদস্য সংখ্যা হবে ১২ জন। অপরদিকে, নির্বাচনী মালামাল রক্ষা ও নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে প্রয়োজনে গুলি করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান।

 মঙ্গলবার ফতুল্লার মাসদাইরের নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে নাসিক নির্বাচন নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি এমন নির্দেশ দেন।

 প্রসঙ্গত, আগামী ২২ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওইদিন সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

 এখানে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৭৪টি কেন্দ্র রয়েছে। ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩০৪টি। মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫৬ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৮ জন প্রার্থী লড়বেন।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.