হাজার কোটি টাকার ভূমি আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ গঠন


জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে তারাপুর চা বাগানের হাজার কোটি টাকার ভূমি আত্মসাতের মামলায় সিলেটের বিতর্কিত ব্যবসায়ী রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। 

এর মাধ্যমে ওই মামলায় রাগীব আলীসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার কাজ শুরু হলো। এ ছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলায় ছয়জনের রিভিউ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আজ রবিবার দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে মামলা দুটির অভিযোগ গঠন ও রিভিউ সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় বলে জানিয়েছেন মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মাহফুজুর রহমান।

তিনি জানান, ভূমি আত্মসাত ও প্রতারণার মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অব্যাহতির আবেদন জানালে আদালত তা না মঞ্জুর করেন। পরে রাগীব আলী, তারাপুর চা-বাগানের সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্ত, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের রাজনগরের বাসিন্দা দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির ও মেয়ে রুজিনা কাদিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

এদিকে স্মারক জালিয়াতি মামলায় রিভিউ সাক্ষ্য দেন সিলেটের সাবেক জেলা প্রশাসক ফয়সল আলম ও সিনিয়র সহকারী সচিব ইমদাদুল হকসহ ৬ সাক্ষী। এ নিয়ে এ মামলায় ১৪ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। গত ১০ জুলাই আদালতে দুটি মামলার অভিযোগপত্র দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান। এরপর গত ১০ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। ওই দিনই বিকেলে সপরিবারে ভারত পালিয়ে যান রাগীব আলী।

২৪ নভেম্বর ভারতে গ্রেপ্তারের পর রাগীব আলীকে দেশে এনে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া ১২ নভেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে রাগীব আলীর ছেলে আব্দুল হাইকে গ্রেপ্তার করে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ। প্রসঙ্গত, ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গায় গড়ে ওঠা তারাপুর চা-বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। ১৯৯০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি ও ভূয়া সেবায়েত সাজিয়ে বাগানটির দখল নেন রাগীব আলী।

গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হাইকোর্টের আপিল বিভাগের এক বেঞ্চ তারাপুর চা-বাগান দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। রায় বাস্তবায়ন করতে সিলেটের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৫ মে চা-বাগানের বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়া ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.