প্রধানমন্ত্রীর বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি তদন্তে দুই কমিটি


হাঙ্গেরি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণ অনুসন্ধানে দুটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। বিমানে ত্রুটির পর নিরাপদে বুদাপেস্টে প্রধানমন্ত্রী বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এই দুটি কমিটি করেছে বলে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান।




রোববার হাঙ্গেরি সফরে রওনা হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি বোয়িং ৭৭৭ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাতে চার ঘণ্টা অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি করে। ত্রুটি মেরামতের পর ওই উড়োজাহাজেই প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা বুদাপেস্টে পৌঁছান। একটি ইঞ্জিনে ‘জ্বালানির চাপ কমে যাওয়ায়’ প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটিকে জরুরি অবতরণ করাতে হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “ওই ঘটনার জন্য কারও অবহেলা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সাংবাদিকদের সামনেই বিমানের এক কর্মকর্তাকে ফোন করে ভিভিআইপি ফ্লাইট পরিচালনায় বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার পরিচালককে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

 বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় যে তদন্ত কমিটি করেছে তার নেতৃত্বে আছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও পর্যটন) স্বপন কুমার সরকার। তবে কমিটির অন্য সদস্যদের নাম এখনও জানানো হয়নি। আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার সদস্যের কমিটির নেতৃত্বে আছেন চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ফজল মাহমুদ চৌধুরী। এই কমিটিতে সদস‌্য হিসেবে আছেন ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মো. হানিফ এবং ইঞ্জিনিয়ার নিরঞ্জন রায়।

কমিটিকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিমান বহরে ‘রাঙা প্রভাত’ নাম পাওয়া বোয়িং উড়োজাহাজটিতে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীসহ ৯৯ জন যাত্রী এবং ২৯ জন ক্রু ছিলেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিমানের বাঁ দিকের ইঞ্জিনের ‘ইঞ্জিন অয়েল’ কমে যাওয়ায় ওই ঘটনা ঘটে। “আমাদের পাইলটরা বেশ কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি ধরতে পারেন।

ককপিটের মনিটরে তা ইনডিকেট করছিল। তখনই তারা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের জানান। ওই সময় বিমান ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩০ হাজার ফুট উপরে ছিল। ওই সময় বাম ইঞ্জিনের ক্ষমতা কমতে শুরু করে। তুর্কমেনিস্তানে অবতরণের ১২ থেকে ১৫ মিনিট আগে সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।” ওই কর্মকর্তা বলেন, “আমি জানতে পেরেছি, কেবল কয়েকটা নাট-বোল্ট টাইট দেওয়াতেই সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে উড়োজাহাজটি পুনরায় ফ্লাই করার আগে দুবার ইঞ্জিনের ট্রায়াল দেওয়া হয়।”

এই গোলযোগের জন্য রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলাকে দায়ী করে তিনি বলেন, “যদি কোনো লাইন বা পাইপ ফেটে যেত তাহলে তা সারাতে অনেক সময় লাগত। ঢাকা বা আশপাশের কোনো গন্তব্য থেকে তা নিয়ে যেতে হত। কারণ এই সব যন্ত্র ভিভিআইপি ফ্লাইটে বহন করা হয় না।” সরকার প্রধানের ফ্লাইটে ইঞ্জিনের নাট-বোল্ট কীভাবে ঢিলা থাকে, সে প্রশ্ন তুলে বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিমানের এই কর্মকর্তা।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.