হুমায়ূন-এর ভূমিকায় ইরফান


বরটি প্রথম প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রভাবশালী দৈনিকের অনলাইন সংস্করণ। তারা দাবি করে, হুমায়ূন-এর ভূমিকায় ইরফান ছাড়াও, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদ-এর চরিত্রে রোকেয়া প্রাচী, মেয়ে শীলা আহমেদ-এর ভূমিকায় নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন টালিগঞ্জের অভিনেত্রী পার্নো মিত্র।
ওই খবরটি নিজের ফেইসবুক পেইজে শেয়ার করে ফারুকি লিখেছেন, “আমাদের তরফ থেকে আমি পরিষ্কার করে বলছি, ছবির ক্রেডিট বা ক্যাম্পেইনে বা কমিউনিকেশন ম্যাটেরিয়েলে আমরা কখনোই দাবি করি নাই বা করার কোনো সম্ভাবনাও নাই যে ‘আমরা হুমায়ুন আহমেদের বায়োপিক বানাচ্ছি’। আমরা কোনো বায়োপিক বানাচ্ছি না। এই ছবির প্রতিটি চরিত্র কাল্পনিক।

” এদিকে কলকাতাভিত্তিক ওই দৈনিককে দেওয়া বক্তব্যে ফারুকি বলেছেন, “আমি চাইছি দর্শক ছবিটা দেখুক আগে। আমি নিজেও হুমায়ূন আহমেদের বিরাট ফ্যান। ওঁর ‘অরা’তেই বাংলাদেশে আমাদের সবার বড় হওয়া। এটুকুই বলব, আমি একটা পরিবারের গল্প বলছি, কয়েকজন মানুষের ভাললাগা, দুঃখ, ক্ষোভ, হিংসা এই আবেগগুলো ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি। সেটা কার জীবন অবলম্বনে, সেটার বিচার ছবি দেখার পরে হলেই বেটার।

ওই প্রতিবেদনে শীলা আহমেদ-এর একটি বক্তব্যও ছাপা হয়, যাতে এব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেই দাবি করেছেন। শীলার বক্তব্য, “আমি বাংলাদেশের মেনস্ট্রিম মিডিয়াতে এ রকম কোনও খবর দেখিনি। আমি সত্যি কিছু জানি না। তবে ফারুকীর ছবিতে যদি লেখা থাকে ‘এটা হুমায়ূন আহমেদের জীবন অবলম্বনে’ তা হলে অবশ্যই ওর আমাদের কাছ থেকে পারমিশন নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ও যদি কয়েকটা ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটা বানায়, সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। তবে ফারুকী যে বাবাকে, বাবার লেখাকে অসম্ভব ভালবাসে সেটা আমি জানি। এখন ছবিটা দেখেই যা বলার বলব।

গ্লিটজ-এর তরফ থেকে হুমায়ূন আহমেদ-এর পুত্র নুহাশ হুমায়ূন-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনিও এব্যপারে কিছু জানেন বলে জানান। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি তিনি। তবে হুমায়ূন আহমেদ-এর দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এব্যাপারে বলেন, আমি যখন প্রথম আনন্দবাজার পত্রিকার কাছে থেকে শুনতে পেলাম তখন আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি। হুমায়ুন আহমেদের মত একজন ব্যক্তিত্ব, তার মতো বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তী মানুষকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে! যাকে নিয়ে সিনেমা তৈরি করবেন, তার (হুমায়ুন আহমেদ) পরিবারের সবাইতো বেঁচে আছে।

প্রত্যেকের চরিত্রই সিনেমাটিতে আছে। একটু আলোচনা করেই সিনেমাটা নির্মাণ করা- এটাই ভদ্রতা, এটাই নিয়ম কিন্তু সবকিছু তিনি (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) বাদ দিয়ে করলেন। বিষয়টা আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর লাগছে। কারণ ইনটেনশন যদি ভালো থাকতো, যদি জিজ্ঞাসা করে সিনেমাটা নির্মাণ করা হত তাহলে হয়ত সবার দিক থেকে সবাই খুশি মনেই রাজি হতো।

তিনি আরও বলেন, “আমরা একটি ভালো কাজ করার আগে সকলের শুভেচ্ছা চাই। অন্তত আমার কাছে শুভেচ্ছা চাইতেন, আর কিছু না হোক। এত লুকোছাপার কারনটা কী? আসলে সুন্দর জিনিস কখনো লুকিয়ে রাখতে হয় না। নোংরা জিনিস লুকিয়ে রাখতে হয়। আমার মনে হচ্ছে তার ইনটেনশনটা ঠিক না।” তবে এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে গ্লিটজকে তিনি বলেন, “সেটা আমি পরবর্তীতে জানাবো।

সিনেমাটির গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রোকেয়া প্রাচী। গুজব ছড়িয়েছে, তার চরিত্রটি গুলতেকিন আহমেদ-এর ছায়া অবলম্বনে তৈরি এ প্রসঙ্গে প্রাচী গ্লিটজকে বলেন, “আমি এই সিনেমায় ইরফান খানের স্ত্রী মায়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আমি যখন সিনেমায় অভিনয় করেছি তখন সেখানে শিল্পী হিসেবে সংযুক্ত হয়েছি। এই সিনেমার প্রযোজনা সংস্থা ও পরিচালক কারো জীবন নিয়ে নির্মাণ করছেন কিনা কিংবা এই ব্যাপারে কারো কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন, নাকি নেননি- এই বিষয়গুলো শিল্পী হিসেবে আমার জানার এখতিয়ারের মধ্যে পড়েনি। জানার সুযোগও ছিলো না।”

 তিনি আরও বলেন, “শিল্পী হিসেবে এখানে মন্তব্য করাটা আমার জন্য একটু সেনসেটিভ হয়ে যায়। কারণ আমি তো পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে অভিনয় করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সেখানে আসলেই আমার জানার কথা নয় হুমায়ুন আহমেদ স্যারের জীবনী নিয়ে নির্মীত হয়েছে কীনা” তিনি আরও জানান, পুরো চলচ্চিত্রের পান্ডলিপি হাতে পেলে হয়ত সেই মূর্হুতে আমি বুঝতে পারতাম কিন্তু যেহেতু আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে সিক্যুয়েন্সগুলো করেছি, পুরো স্ক্রিপ্টটা আমি পাইনি। সেই মূর্হুতে আসলে এটা বোঝা আমার জন্য ডিফিকাল্ট ছিলো। তবে বতর্মানে খবরটা শোনার পর থেকে, সবকিছু মিলিয়ে আমার জন্য পুরো বিষয়টা অনেক বেশি বিব্রতকর। আমি আসলেই খুব বিব্রতবোধ করছি।

বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং ভারতের এসকে মুভিজ-এর যৌথ প্রযোজনায় নির্মীত হয়েছে ‘ডুব’ সিনেমাটি।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.