যৌন নিপীড়নে আহসানউল্লাহর শিক্ষকের বিচার শুরু


আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এইউএসটি) চাকুরিচ্যুত শিক্ষক মাহফুজুর রশীদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মামলায় অভিযোগ গঠন করেছে আদালত। এর ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক সফিউল আজম আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষীর জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, যৌন হয়রানির অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ মে রাতে কলাবাগান থানায় শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদদৌল্লাহ আল সায়েম। ওই দিনই কলাবাগানের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।

অপরদিকে, ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন শিক্ষক ফেরদৌস। ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানি, নগ্ন সেলফি প্রকাশ, ধর্ষণ চেষ্টা ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত ফেরদৌসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আফরোজা আইরীন কলি। যৌন হয়রানির শিকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীসহ মোট ২৮ জনকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক ফেরদৌস আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি ও প্রশ্নপত্র এবং মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটানোর চেষ্টা করে।

এক ছাত্রীর সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজ বাসস্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা এবং তার নগ্ন ছবি ওয়েবসাইট ও মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেয়ায় পাবলিক পরীক্ষা আইনে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। আসামি বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের পড়া বোঝানো, অ্যাসাইনমেন্ট, টিউটোরিয়াল, গ্রুপ ডিসকাস, থিসিস মূল্যায়ন, চারিত্রিক সনদ দেয়া, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানিসহ আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।

গত ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের এক ছাত্রীকে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলে আসামির নিজ বাসায় নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন ওই শিক্ষক। শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করার জন্য আসামি ওই ছবিগুলো তার হেফাজতে রেখেছেন।

একইভাবে আরও তিন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি তুলেছেন আসামি। তার কাছ থেকে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে গত ৩০ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে তাকে চাকুরিচ্যুত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment

Thanks for your comments.